The role of student society in eliminating caste and untouchability, জাতিভেদ ও অস্পৃশ্যতা দূরীকরণে ছাত্রসমাজের ভূমিকা.

 

জাতিভেদ ও অস্পৃশ্যতা দূরীকরণে ছাত্রসমাজের ভূমিকা 

আমাদের দেশ ভারত একটি উন্নয়নশীল দেশ । এই দেশের অগ্রগতির মূলে রয়েছে ছাত্রসমাজ । ছােটো বড়াে সমস্ত কাজে এদের ভূমিকা অতুলনীয় । কিন্তু এর মধ্যেও একটি বিষয়ে আমরা অনেক পিছিয়ে পড়েছি । তার মূলে রয়েছে জাতিভেদ ও অস্পৃশ্যতা । আমরা জানি ভারত মিশ্র জাতির দেশ । তা সত্ত্বেও আমরা ভারতবাসী আমাদের সবার অধিকার সমান । জাতি , ধর্ম , নির্বিশেষে অনেক মনীষী আমাদের অনুপ্রেরণা দিয়েছেন । ছাত্রসমাজ সেই অনুপ্রেরণাকেই গ্রহণ করে জাতিভেদ ও অস্পৃশতা দূরীকরণে অবতীর্ণ হয় । ছাত্রসমাজ বা যুব সমাজের জাতিভেদ দূরীকরণের আগে বলা দরকার জাতিভেদ সমস্যা নিয়ে কেন ভারত আজ পিছিয়ে । জাতিভেদ , ধর্ম ইত্যাদির বিরােধ সৃষ্টি করে মানুষই । চারিদিকে , দাঙ্গা , মারামারিতে ভরে যাচ্ছে , মানুষ ক্রমশ স্বার্থপর এবং আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছে । এছাড়াও এক মানুষ অন্য মানুষকে নীচ জাতি বলে হেয় করে সমস্ত সুযােগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করছে । দক্ষিণ ভারত , বিহার ও উত্তর প্রদেশে নিম্ন শ্রেণির মানুষকে কুয়াে থেকে জল তুলতে দেওয়া হয় , তাদের মন্দিরে প্রবেশও নিষিদ্ধ । ঠিকমতাে খাবারের সংস্থানও হয় না নীচু জাতি বলে । গান্ধিজি প্রথম নীচু জাতির মানুষকে হরিজন ’ নামে আখ্যা দিয়ে সমাজের একটি স্তরে আনার প্রচেষ্টা করেন তাদের মর্যাদা দেওয়ার চেষ্টা চালান । আমাদের সংবিধানের স্রষ্টা ড . আম্বেদকার নিম্ন ও দলিত শ্রেণির মানুষের জন্য বিভিন্ন সুযােগ সুবিধার ব্যবস্থা করেন ও সারাজীবন এর জন্য সংগ্রাম চালান । কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ তার ‘ ভারততীর্থ কবিতায় বলেছেন ব্রাত্মণ পতিতের হাত ধরে তার মনশুচি করুক তবেই এই ভারতভূমি তীর্থনীরে পরিণত হবে । বীর সন্ন্যাসী স্বামী বিবেকানন্দও তার সারাটি জীবন নিম্নশ্রেণির মানুষের উপকারের প্রচেষ্টায় অতিবাহিত করেন । তিনি বলতেন — নীচ ভারতবাসী , দরিদ্র ভারতবাসী , চন্ডাল ভারতবাসী আমার ভাই , বন্ধু । তাঁদের এই বাণীকে অনুসরণ করে জাতিভেদ ও নানান অস্পৃশ্যতা থেকে মুক্তি দিতে পারে আমাদের ছাত্রসমাজ বা যুব সমাজ । এই যুব সমাজের ভূমিকা কিছু অন্যরকম । যুব সমাজ বা ছাত্রসমাজ নিম্নশ্রেণির মানুষের জন্য শিক্ষা ও খাদ্যের ব্যবস্থা করছে । নাম না জানা বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে শিক্ষার প্রসার ঘটাচ্ছে । তাদের স্বাস্থ্যের জন্য বিভিন্ন রকম ক্যাম্পের মাধ্যমে নানা পরিকল্পনা করছে । তাদের উন্নত বসতির জন্য সরকারের সাহায্যে তারা কার্য চালিয়ে যাচ্ছে । নীচু জাতির মানুষেরা যাতে পিছিয়ে না পড়ে তার জন্য সমস্ত রকম সুযােগ সুবিধার চেষ্টা কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার চালাচ্ছে । বর্তমানে BPL কার্ডের মাধ্যমে কম মূল্যে সবরকম সুবিধা পাওয়া যায় । এছাড়াও বিভিন্ন সরকারি , বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্থানের অনুন্নতও পিছিয়ে পড়া জাতির মানুষের জন্য বিশেষ সংরক্ষণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে । বর্তমানে ছাত্রসমাজ এই কাজে সামিল হচ্ছে । যা আগামী দেশের অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করবে ।